মৃগী রোগ কি , এর লক্ষণ ও প্রতিকার
মৃগী রোগ ; মৃগী (Epilepsy) হলো একটি স্নায়বিক রোগ যেখানে মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক সিগন্যালের অস্বাভাবিকতার কারণে বারবার খিঁচুনি (Seizure) হয়। এটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হতে পারে এবং সময়মতো চিকিৎসা না করলে জটিলতা তৈরি করতে পারে।
একজন মৃগী রোগীমৃগী রোগের লক্ষণ;
মৃগী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণ রোগভেদে ও খিঁচুনির ধরনভেদে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত দেখা যায়:
-
খিঁচুনি (Seizure) – হঠাৎ হাত-পা শক্ত হয়ে যাওয়া বা কাঁপুনি শুরু হওয়া।
-
চেতনা হারানো – কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত সংজ্ঞাহীন থাকা।
-
দৃষ্টি বা শ্রবণ বিভ্রাট – চোখে ঝিলিক দেখা, কানে অদ্ভুত শব্দ শোনা।
-
অচেতন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা – কিছুক্ষণের জন্য ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা।
-
অপ্রত্যাশিত আচরণ – হঠাৎ চিৎকার, ভয় বা অস্বাভাবিক নড়াচড়া।
-
শরীর হঠাৎ ঢলে পড়া – ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া।
-
মুখে ফেনা ওঠা বা দাঁত কিড়মিড় করা (তীব্র খিঁচুনির সময়)।
প্রতিকার ও চিকিৎসা
মৃগী পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চিকিৎসা ও প্রতিকার হলো:
-
চিকিৎসকের পরামর্শ
-
নিউরোলজিস্টের কাছে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা করাতে হবে।
-
EEG, MRI ইত্যাদি টেস্ট করে সঠিক কারণ নির্ণয় করা হয়।
-
-
ওষুধ সেবন
-
মৃগী নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে বিশেষ কিছু ওষুধ (Antiepileptic drugs) ব্যবহার করা হয়।
-
যেমন: Levitiracetam, Carbamazepine,Sodium Valproate,Lamotrigine,Lacosamide,Brevaracetam,Oxcarbazepine ইত্যাদি।
-
নিয়মিত ওষুধ খাওয়া খুব জরুরি, বন্ধ করলে খিঁচুনি বেড়ে যেতে পারে।
-
-
লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট
-
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
-
মানসিক চাপ কমানো।
-
অতিরিক্ত আলো, ঝলকানি বা শব্দ থেকে দূরে থাকা।
-
অ্যালকোহল ও নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলা।
-
-
বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি
-
ওষুধে নিয়ন্ত্রণ না এলে সার্জারি, Vagus nerve stimulation বা ketogenic diet ব্যবহৃত হতে পারে।
-
জরুরি করণীয় (খিঁচুনির সময়)
-
রোগীকে নিরাপদ স্থানে শুইয়ে দিতে হবে।
-
মুখে কিছু ঢোকানোর চেষ্টা করবেন না।
-
শক্ত করে ধরে রাখবেন না, বরং পাশ ফিরিয়ে শুইয়ে দিতে হবে যেন শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক থাকে।
-
খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি হলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
রাইয়ান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url